জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ নৌ-ঘাটের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। এখন আর নজরে পরে না বাহাদুরাবাদ ঘাট ও ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ রোডে স্টিমার।
সরেজমিনে দেখা গেছে. ঘাটের বর্তমান অবস্থা অসংখ্য স্থানে রেললাইনের নিচের মাটি সরে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের, কাঠের স্লিপার পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় রেলপাত নষ্ট হয়ে গেছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে রেলস্টেশনের টিনের তৈরি ঘর ও অন্য সরঞ্জামাদি। যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে তা-ও অযত্নে, অবহেলায় নষ্টের পথে।
সঠিক তদারকি না থাকায় নষ্ট হচ্ছে রেলের যন্ত্রাংশ, চুরি হয়ে যাচ্ছে রেলপাত, অসংখ্য স্লিপারসহ মূল্যবান যন্ত্রাংশ। বেদখল হচ্ছে রেলের কোটি কোটি টাকার জমি। রেলওয়ে ফেরি ও ট্রেন চলাচল প্রায় তিন যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে। যমুনার পশ্চিম পাড়ের গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর, দিনাজপুরের সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জামালপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শেরপুর এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠী। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করতে বাহাদুরাবাদ থেকে ফুলছড়ি ঘাট রুটে আবারও ফেরি ও ট্রেন চলাচলের দাবি জানিয়েছেন রেলওয়ে যাত্রীরা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৮ সালে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ঘাট ও গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ ঘাট দিয়ে যমুনা নদীতে রেল ফেরি সার্ভিস চালু হয়। রেলের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় যমুনা নদীর ওপর দিয়ে রেলযাত্রী ও পণ্যবাহী ওয়াগন পারাপার। পরে নিয়মিত ফেরি চলাচল করলেও ২০০৫ সালে যাত্রীবাহী ফেরি পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৭ সালে যমুনা নদীর নাব্যতা সংকটে বাহাদুরাবাদ ঘাটটি ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি থেকে সরিয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ি হলকার চরে বাহাদুরাবাদে স্থানান্তর করা হয়।
আরও জানা যায়, দেওয়ানগঞ্জ বাজার স্টেশন থেকে বাহাদুরাবাদ ঘাট পর্যন্ত নতুন করে রেলপথ নির্মাণ করা হয়। বাহাদুরাবাদ ঘাট নতুন জায়গায় স্থানান্তর করার পরে পুনরায় ট্রেন সার্ভিস চালুর কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত এ রুটে ট্রেন চালু হয়নি। সঠিক তদারকি না থাকায় নষ্ট হচ্ছে রেলের যন্ত্রাংশ, চুরি হয়ে যাচ্ছে রেলপাত, অসংখ্য স্লিপারসহ মূল্যবান যন্ত্রাংশ। আর বেদখল হয়ে যাচ্ছে রেলের কোটি কোটি টাকার জমি। পুরাতন বাহাদুরাবাদ ঘাট এখন নদীভাঙন পরিবারও ভূমিহীনদের আশ্রয়স্থল।