দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি : দেওয়ানগঞ্জের চখার চর-কাঠার বিল সড়কে থাকা একটি খালের ওপর সেতু নির্মাণ হয়নি ৫৩ বছরেও। একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়ার পর মেরামত হয়নি এক বছরেও। বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়া এবং পাকা সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ছয়টি গ্রামের মানুষ ছোট নৌকা দিয়ে খাল পার হচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলার হাতীভাঙ্গা ইউনিয়নের চখার চর-কাঠার বিল সড়কের খালের ওপর স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছরেও নির্মাণ হয়নি পাকা সেতু। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে খালের ওপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে চলাচল করে আসছেন। সেতুটি ২০২২ সালে ভেঙে পড়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করলে চলাচলের সুবিধার জন্য সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুন্নাহার শেফা প্রায় ১০০ মিটার বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেন। ২০২৩ সালে বন্যায় সাঁকোটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মেরামত না হওয়ায় এ বছর বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এতে হাতীভাঙ্গা ইউনিয়নের সাপমারি, চখার চর, বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের শাহাজাদপুর, ধুলাউড়ি, বগার চর ইউনিয়নের সাতভিটা, হামিদপুর গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষকে খাল পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শাহাজাদপুর গ্রামের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়শা সিদ্দিকা বলে, খালে বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় আমরা স্কুল যেতে পারি না। ছোট নৌকা দিয়ে পার হতে ভয় লাগে।
চখারচর গ্রামের কৃষক বেলায়েত হোসেন বলেন, চখারচর খালে ব্রিজ বা সাঁকো না থাকায় আমরা বিপদে রয়েছি। কাঠার বিল হাটে যাওয়া বন্ধ হয়েছে। যানবাহন চলাচল করতে না পারায় হাটে ধান, পাট ও সবজি নিতে নিতে পারি না। শিক্ষক জামিউল ইসলাম বলেন, খালে বছরে ১২ মাস পানি থাকে, যার কারণে কাঠার বিল হাটে গেলে হামিদপুর দিয়ে ৬ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। খালে সাঁকো থাকলে ১ কিলোমিটারের পথ। ইউপি সদস্য মাসুদ রানা বলেন, চখারচর থেকে হাতীভাঙ্গা পরিষদে যেতে সময় লাগে ১০ মিনিট। ব্রিজ না থাকায় ঘুরে যেতে এক ঘণ্টা সময় লাগে। কবে নাগাদ ব্রিজ নির্মাণ হবে জানি না। হাতীভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইউনিয়নের মধ্য চখার চর গ্রামটি সবচেয়ে অবহেলিত ও ঘনবসতিপূর্ণ। কাঠার বিল চখার চর রাস্তার খালে ব্রিজ না থাকায় ছয়টি গ্রামের মানুষ চরম বিপাকে রয়েছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে ওই এলাকার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। উপজেলা প্রশাসন বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করে দিলে প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে। এলাকাবাসী সাঁকোটি মেরামতের জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি তুলেছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী তোফায়েল আহামেদ বলেন, ব্রিজ নির্মাণ কাজের জন্য সার্ভে চলমান রয়েছে, তবে কিছু দিন সময় লাগবে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, সরকারি কোনো বরাদ্দ পেলে সাঁকোটি মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।