সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি মিয়ার চরে

বর্তমান সরকার সারাদেশে যোগাযোগ ব্যাবস্থার ব্যপক উন্নয়ন করলেও তার ছোঁয়া লাগেনি কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় মিয়ার চরে।এলাকা বাসীর যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হলহলিয়া নদীর ওপর বাঁশের সাকো। রৌমারী উপজেলার ৬নং চর শৌলমারী ইউনিয়নের বড় একটি গ্রাম মিয়ার চর। মিয়ার চর ও মশালের চর গ্রামের সমন্বয়ে ৫ নং মিয়ার চর ওয়ার্ড। ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১৪২১। নতুন ভোটার সংখ্যা ৩৫৬ জন (জরিপ ২০১৮)। এ গ্রামের সাধারণ মানুষ কৃষি উপর নির্ভর করে। প্রতি বছর বন্যায় গ্রামের ফসল নষ্ট করে ফেলে। ফলে সাধারণ মানুষকে ভাটির দেশ ঢাকা,টাঙ্গাইল, পাবনা,সিরাজগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও অন্যান্য জায়গায় কাজের সন্ধানে যেতে হয়। এ অঞ্চলের মানুষ তাঁত শিল্পের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বেশির ভাগ সময় তাদের জীবিকার অন্বেষনে ঘরের বাহিরে থাকতে হয়। গ্রাম টিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি ক্লিনিক, একটি বাজার,একটি আরডি আর এস প্রকল্পের অফিস, একটি নতুন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বেশির ভাগ ছেলে মেয়ে চর শৌলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,চর শৌলমারী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,চর শৌলমারী মহিলা কলেজ, চর শৌলমারী আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে থাকেন। এখন ও তাদের ছোট হলহলিয়া নদীর ভাঙ্গা বাঁশের সেতুর উপুর দিয়ে আসতে হয়। ছোট ছোট ছেলে মেয়ে স্কুলে আসতে কত কষ্ট হয় তা না দেখলে বোঝা যাবেনা। বন্যার সময় সেতু ভেঙে উল্টে যায় খেয়ার নৌকায় পাড়ি দিতে হয়। বেশি বন্যার সময় বাবা মাকে টাকা দিয়ে,নিজস্ব নৌকা দিয়ে হাট বাজারে যেতে হয়,ছেলেমেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দিতে হয়। কখনও বাড়ি থেকে পরিক্ষা দেয়ার জন্য বাহির হয়েও নৌকা ফেল করলে সেদিন আর পরীক্ষা দেওয়া পিছিয়ে যায়। অবহেলিত গ্রামটিতে শিক্ষার আলো লালন করে তাদের ছেলে মেয়ে কে উচ্চ শিক্ষার জন্য বাহিরে পাঠান। গ্রামের রাস্তা বেহাল দশা। ঠেলাগাড়ি তো দূরের কথা সাইকেল দিয়ও যাওয়া যায়না। সারা বাংলায় উন্নয়নের ছোঁয়া পেলেও মিয়ার চরে এখনও লাগেনি  উন্নয়নের কোন ছোঁয়া । এ গ্রাম থেকে রৌমারী উপজেলা শহরের দূরত্ব প্রায় তেরো কিলোমিটার। গ্রামটির কোলঘেঁষে বয়ে গেছে হলহলিয়া নদী। বন্যার সময় এই নদীতে ব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে পরে। এমপি,উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান,মেম্বার থেকে শুরু করে উপর মহল ব্রিজ করবে বলে ওয়াদা করে যায়। এমপি, চেয়ারম্যান, মেম্বার হওয়ার পরে ভুলে যান তাদের ওয়াদার কথা। কত দিন পর তাদের দেয়া ওয়াদা সত্যি হবে সাধারণ মানুষ সে আশায় বুক বাধে এখনও। ২০০৭ সালের মার্চ মাসে সর্ব প্রথম ব্রিজ করার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন মাটি পরীক্ষা করে। ২০১৪ সালে দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশ ইসলামী ফাউন্ডেশন মাটি পরিক্ষা করেন। কুড়িগ্রাম -৪ সংসদ সদস্য রুহুল আমিন ব্রিজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্রিজটি কাগজ পাশ করেও করেননি ব্রিজ। এ নিয়ে ৫ নং চর শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব কে,এম,ফজলুল হক অনেক দৌড়া দৌড়ি করেন। অবশেষে তিনিও ব্যর্থ হন। তবে হাল ছাড়েন নি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিষয় টি তদারকি করলেও নজরে নেননি। ব্রিজটি হলে উত্তর অঞ্চলের মানুষের সাথে টাপুরচর হয়ে রৌমারী যোগাযোগ ৩০মিনিট সময় লাগবে। আবারও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আসছে। আবারও ওয়াদা করার সময় এসে গেছে। বর্তমানে হলহলিয়া নদীতে যে বাঁধ ছিল সেটাও মাটি ক্ষয় হয়ে নদীর সঙ্গে মিশে গেছে। ফলে জনগণের চলাচলের মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় যদি হলহলিয়া নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয় তাহলে জনগণের অনেকটাই লাঘব হবে। চর শৌলমারী ইউনিয়নেরব মানুষের প্রাণের দাবি মিয়ার চর ব্রিজ করে এ অঞ্চলের লোকজনের যাতায়াত ব্যবস্থা সচল রাখা। চর শৌলমারী,মিয়ার চর, দাঁতভাঙা, হাজির হাট,টাপুর চর,রৌমারী যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন মিয়ার চর ব্রিজ। বঙ্গবন্ধুর-কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলহলিয়া নদীতে ৬ নং চর শৌলমারী ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ৫নং ওয়ার্ডের” মিয়ার চরে  ব্রিজ নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি এলাকাবাসীর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পাদক: সম্পাদকের নাম

অফিস এড্রেস: রাজিবপুর, কুড়িগ্রাম - ৫৬৫০

অনুসরণ করুন

© 2024 Muktanchal News Portal.

Built with care by Pixel Suggest