দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত সানন্দবাড়ী অঞ্চলটি একটি প্রসিদ্ধ প্রাচীন জনপদ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যেসব জমিতে ভুট্টা, গমসহ বিভিন্ন ফসল বপন করে আশায় বুক বেঁধেছিলেন কৃষক, অসময়ের নদীভাঙনে সেসব ফসলি জমি ভেঙে একাকার হয়ে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে তীব্র ভাঙনের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার শুষ্ক মৌসুমে আবার ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
সানন্দবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদ সানন্দবাড়ী এলাকায় এই শুষ্ক মৌসুমে যেভাবে আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে, আমার জীবনে এর আগে আমি তা দেখিনি।
নদীভাঙনে খোলাবাড়ী এলাকার জাহিদুল ইসলাম, ডা. আ. ছালাম, মৌলভীরচরের মোশারফ হোসেন, আবু দাউদ, আজিজুর রহমানসহ অসংখ্য লোক জমিজমা হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়েছেন।
চর আমখাওয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম লাভলু বলেন, ‘এই সরকারের আমলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ বহু উন্নয়নকাজ হয়েছে; কিন্তু এই ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কারণে অন্যান্য উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাচ্ছে।’
চর আমখাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন শুরু হলে বহু চেষ্টা করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন মোকাবেলা করার চেষ্টা করেছি। এখন শুষ্ক মৌসুমে আবার ভাঙন শুরু হয়েছে, জিও ব্যাগ ধসে যাচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ ব্যাপারে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘৯০০ মিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন আক্রান্ত হয়েছে। আমরা সমীক্ষা করে দেখেছি, সেই স্থানে কাজ করতে ৯ কোটি টাকার মতো লাগবে।’
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, পাটাধোয়াপাড়ার ভাঙন প্রতিরোধে ৯০০ মিটার এলাকায় অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেলে তীর প্রতিরক্ষাকাজের জন্য ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি প্রস্তাবনা ডিজির দপ্তর হয়ে অর্থ পরিদপ্তরে জমা আছে। অর্থপ্রাপ্তি সাপেক্ষে কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া পাঁচ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের জন্য কাগজপত্র জমা দেওয়া আছে।